 |
বাঙালি থালি |
 |
বাঙালি ঐতিহ্যবাহী খাবার |
আমরা বাঙালিরা খুব খাদ্য রসিক, বাঙালি যেমন খেতে ভালোবাসে তেমনি আবার খাওয়াতেও ভালোবাসে। যেকোনো ট্র্যাডিশনাল অনুষ্ঠান হউক সবার আগে খাওয়ার বাজেট করা হয়। কি কি খাওয়ার মেনুতে থাকবে সেটা ভালো করে যাচাই করে সুনিশ্চিত করা হয়। অনুষ্ঠান বিয়ে, অন্নপ্রাশন, জন্মদিন, সাধ, শ্রাদ্ধ যাই হোউক খাওয়া ভালো থাকা চাই। সাধারণ ভাবে বাড়ীতে আমরা যা খাই ভাত মাছ মাংস সবজি ইত্যাদি সেই সকল খাবারই অনুষ্ঠনেও খেয়ে থাকি কিন্তু সেটা হয় ব্যাবস্থা বুঝে। কেই একটু বেশি আবার কেই একটু কম খরচে খাওয়ায়। একটি সম্পূর্ন বাঙালি থালি সাজাতে গেলে যা যা দরকার হয় তাই আজ আমি এই আর্টিকেল এ তুলে ধরলাম।
ভাত
 |
ভাত |
বাঙালি থালিতে সবার প্রথমে যে উপকরণ যায় সেটা হলো ভাত। ভাত বাঙালির প্রিয় খাবার ভাত ছাড়া বাঙালিরা খাবার ভাবে না। যেমন প্লেন ভাত, ফ্রাই রাইস, জিরা রাইস, পোলাও ইত্যাদি পদে ভাতের ব্যাবহার হয়।
দুই পদের ডাল
 |
ডাল |
বাঙালি পাতে ডাল না থাকে সেটা কোনোদিন হয় না। ডাল ছাড়া ভাত মানায় না, ডাল ভাত আলু সেদ্ধ একটি সুস্বাদু বাঙালি ডিশ। যেকোনো অনুষ্ঠানে সাধারনত মুগডালের ব্যাবহার হয় দুই থেকে তিন ধরনের ডাল রান্না হয় যেমন টক ডাল, মিষ্টি ডাল, তিতা ডাল, ইত্যাদি।
ভাজা
 |
আলু ভাজা |
 |
বেগুনী |
একটি বাঙালি থলিতে ভাত ডালের সথে ভাজার একটা গুরু্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভাজার মধ্যে আলু ভাজা, পটল ভাজা, করলা ভাজা, আবার পাকড়াও হতে পারে যেমন পিয়াঁজ পাকড়া, পালং শাকের পাকোড়া, বাঁধাকপির পাকোড়া, মিষ্টি কুমড়ার পাকোড়া ও বেগুন ইত্যাদি।
 |
আলু ফুলকপির ডালনা |
 |
আলু পটলের ডালনা |
একটি বাঙালি থলিতে সবজি একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ কমপক্ষে দুই থেকে তিন ধরনের সবজি থাকে যেমন একটি থাকবে সিজনাল সবজি বাঁধাকপির ঘণ্ট বা আলু পোস্ত আবার আলু পটলের ডালনা কিংবা ফুলকপির ডালনা, আলু মোটরের সবজি কিংবা ঝিঙ্গে পোস্ত ইত্যাদি।
সুক্তো
 |
সুক্তো |
সুক্তো একটি চির পরিচিত বাঙালি ডিশ আমরা বাড়িতে প্রায় সুক্তো খেয়ে থাকি, সুক্তো বিশেষ প্রয়োজন শ্রাদ্ধে, ট্র্যাডিশনাল রীতি নীতি অনুসরণ শ্রাদ্ধে সুক্তো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উচ্ছে, কাচাকলা, সজনে ডাটা, কলার থোড়, বেগুন, আলু, ঝিঙে দিয়ে রান্না হয় এই সুক্তো।
সালাদ
 |
সালাদ |
পিঁয়াজ, কাচা লঙ্কা, লেবু, সশা, গাজর ও বাঁধাকপি দিয়ে সালাদ বানিয়ে বাঙালি থলিতে পরিবেশন করা হয়। অন্য সব উপকরনের সাথে সালাদেও ভূমিকা আছে।
 |
পাবদা মাছের ঝোল |
 |
রুই মাছের কালিয়া |
 |
সরষে ইলিশ |
কোথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালি মাছ হলো বাঙালি থলির একটি অত্যন্ত গুুত্বপূর্ণ ও প্রধান উপকরণ। মাছ ছাড়া বাঙালির খাওয়া হয় না। মাছ আমাদের একটি ঐতি্যবাহী খাবার। যে কোনো অনুষ্ঠানে মাছ আমাদের সর্ব প্রথম আয়োজিত উপাদান। কমপক্ষে দুই থেকে তিন ধরনের মাছ আমাদের একটি অনুষ্ঠানে হয়ে থাকে যেমন রুই, কাতল, পাবদা, বাটা, চিতল, ট্যাংরা, চিংড়ী ও বাঙালির প্রিয় মাছ ইলিশ। এই মাছের বিভিন্ন পদে রান্না করে অতিথীদের পরিবেশন করা হয়।
মাংস
 |
মাংস |
বাঙালি থলির আর একটা প্রধান উপাদান হলো মাংস। মুরগী, খাসি, ও পাঠা ইত্যাদির মাংস আমাদের অনুষ্ঠানে হয়ে থাকে। বিয়ে অনুষ্ঠানে সাধারনত খাসীর মাংস বেশির ভাগ বাড়িতে হয়ে থাকে। মুরগীর মাংসর জোগাড় বেশি আবার দামেও সস্তা তাই মানুষ প্রতিনিয়ত রান্নায় ব্যবহার করে। আবার কোনো অনুষ্ঠানে খাসীর মাংস কিংবা পাঠার মাংস রান্না হয়।
চাটনি
 |
চাটনি |
এত কিছুর আয়োজনের পর চাটনি একটা বিশেষ প্রয়োজন থাকে। মাছ মাংস সব স্পাইসি খাবার খাওয়ার পর চাটনি খাওয়া খুবই দরকার এতে হজোম ভালো হয়।
দই ও মিষ্টি
 |
মিষ্টি |
 |
মিষ্টি দই |
 |
রসগোল্লা |
সব ভালো ভালো খাবার খাওয়ার পর চাটনির সাথে দই ও মিষ্টি খাওয়া খুবই দরকার। এতে সকল তেল মশলা খাবার খাওয়ার পর হজমে সাহায্য করে। এছাড়া বাংলার সেরা মিষ্টি ও দই বাঙালির হৃদয়ে বসে আছে। এই দই মিষ্টি বাড়িয়ে দেয় বাঙালির সম্মান, অনুষ্ঠানের খাওয়া দাওয়া শেষ করে এই মিষ্টি ও দই। মিষ্টির মধ্যে রসগোল্লা, চম চম্, রসমালাই, পায়েস ও সন্দেশ তা যেকোনো হতে পারে।
একটি ঐতি্যবাহী বাঙালি থালি সাজাতে এই সকল খাবার প্রয়োজন। কিছু হেরফের হতে পরে কিন্তু ডিসে প্রত্যেকটি আইটেমের উপস্থিতি ১০০ শতাংশ প্রয়োজনীয়।